পশ্চিমবঙ্গে এডুকেশন লোন কীভাবে পাবেন? ডকুমেন্ট ও সুদ কত?জানুন বিস্তারিত
পশ্চিমবঙ্গে এডুকেশন লোন কীভাবে পাবেন? ডকুমেন্ট কি লাগবে? সুদ কত?
বর্তমানে, ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য লোন বা আর্থিক সহায়তা পাওয়ার পথ অনেক সহজ হয়ে গেছে। পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীদের জন্যও বেশ কিছু সরকারি এবং ব্যাংকিং সুবিধা রয়েছে, যা তাদের উচ্চশিক্ষায় সহায়তা করতে পারে। আসুন জানি, কীভাবে পশ্চিমবঙ্গে এডুকেশন লোন পাবেন, তার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট এবং সুদের হার কী হবে।
এডুকেশন লোন কী?
এডুকেশন লোন হলো একটি ঋণ যা ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা খরচ যেমন, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, টিউশন ফি, বইয়ের খরচ, হোস্টেল ফি ইত্যাদি মেটানোর জন্য দেওয়া হয়। এটি ব্যাংক বা ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া যায়।
এডুকেশন লোন কেন প্রয়োজন?
উচ্চশিক্ষার খরচ অত্যন্ত বেশি হওয়ায় অনেক ছাত্রছাত্রীর পক্ষে একে বহন করা সম্ভব হয় না। তাই এডুকেশন লোন এর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা তাদের পড়াশোনার খরচ মেটাতে সাহায্য পায়। এতে তারা পরবর্তীতে চাকরি পাওয়ার পর ঋণ পরিশোধ করতে পারে।
এডুকেশন লোন এবং পার্সোনাল লোনের মধ্যে পার্থক্য:
- সুদ হার: এডুকেশন লোনের সুদের হার অনেক কম থাকে। সাধারণত ৮%-১২% সুদ হয়, তবে পার্সোনাল লোনের সুদ অনেক বেশি থাকে।
- ট্যাক্স ছাড়: শিক্ষার জন্য নেওয়া লোনে ট্যাক্স ছাড় পাওয়া যায়, যা পার্সোনাল লোনে পাওয়া যায় না।
কীভাবে এডুকেশন লোন আবেদন করবেন?
এডুকেশন লোনের জন্য আবেদন করতে, আপনি নিচের দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন:
- ব্যাংক লোন প্রক্রিয়া: কোনো ব্যাংকের কাছে সরাসরি আবেদন করতে পারেন।
- স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড: পশ্চিমবঙ্গ সরকার ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের ব্যবস্থা করেছে, যার মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন পাওয়া যায়।
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড কী?
এটি সাধারণ ক্রেডিট কার্ডের মতো, তবে এটি শুধুমাত্র ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার খরচের জন্য ব্যবহৃত হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই কার্ডের মাধ্যমে ছাত্রদের লোন প্রদান করে, যা পরবর্তীতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হয়।
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা:
- আপনি এই কার্ড দিয়ে টিউশন ফি, বইয়ের খরচ, ল্যাপটপ কেনা ইত্যাদি খরচ মেটাতে পারেন।
- সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন দেওয়া হয়।
- ৪% সুদের হারে লোন পাওয়া যায়।
এডুকেশন লোনের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:
এডুকেশন লোন বা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের জন্য আপনাকে নিচের ডকুমেন্টগুলো জমা দিতে হবে:
- মার্কশিট (পূর্ববর্তী পরীক্ষার)
- নতুন কোর্সের ভর্তি প্রমাণপত্র
- আধার কার্ড
- প্যান কার্ড
- পারিবারিক বার্ষিক আয়ের প্রমাণপত্র
- ঠিকানার প্রমাণপত্র
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি
- ব্যাংক পাসবুক
এডুকেশন লোনের সুদের হার:
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেত্রে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার সাধারণত ৪% সুদ নেয়, তবে অন্যান্য ব্যাংকগুলির জন্য এই সুদের হার ৮%-১২% পর্যন্ত হতে পারে।
শেষ কথা:
এডুকেশন লোন বা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড আপনাকে উচ্চশিক্ষায় সহায়তা করবে, কিন্তু এই ঋণ গ্রহণের আগে আপনার ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা থাকা জরুরি। ব্যাংক বা ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের অফার এবং শর্তাবলী ভালোভাবে জানার পরেই আবেদন করা উচিত।
এই সুবিধাগুলির মাধ্যমে আপনি আপনার উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন, এবং ভবিষ্যতে চাকরি পাওয়ার পর ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম হবেন।